Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ

  • সংক্ষিপ্ত বর্ণনা
  • প্রতিষ্ঠাকাল
  • ইতিহাস
  • প্রধান শিক্ষক/ অধ্যক্ষ
  • অন্যান্য শিক্ষকদের তালিকা
  • ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা (শ্রেণীভিত্তিক)
  • পাশের হার
  • বর্তমান পরিচালনা কমিটির তথ্য
  • বিগত ৫ বছরের সমাপনী/পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল
  • শিক্ষাবৃত্ত তথ্যসমুহ
  • অর্জন
  • ভবিষৎ পরিকল্পনা
  • ফটোগ্যালারী
  • যোগাযোগ
  • মেধাবী ছাত্রবৃন্দ

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা


মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

 

দুই কুঁড়ি এক পাতার অঞ্চল মৌলভীবাজার খরস্রোতা মনুর তীর ঘেঁষে অবস্থিত মফস্বলের একটি ছোট্ট জেলা শহর। উত্তরদিকে মনু বয়ে চলেছে পশ্চিম মুখী, শহরের পূর্ব ও দক্ষিন দিক উচঁনীচু টিলা বেষ্টিত; অসংখ্য বৃক্ষের শ্যামল সবুজ আস্তরণ, হরেক রকম পাখ্ পাখালীর কলরবে মুখরিত, সমতল পশ্চিম এলাকায় ঘরে ঘরে সাজানো অসংখ্য বাণিজ্য সম্ভারে পরিপূর্ণ বিপণী বিতান।

          ছবির মতো সাজানো এই শহরের টিলাময় দক্ষিণ প্রান্তে ১৯৫৬ সালের ১ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয়, জেলার বৃহত্তম এই বিদ্যাপীঠ মৌলভীবাজার কলেজ। কলেজ প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে কারিগর এলাকার বিশিষ্ট বিদ্যানুরাগী ও দানশীল ব্যক্তিবর্গ। সাথে আন্তরিক ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন, তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক জনাব এম আরিফ। বরাবরের মতোই শিক্ষা ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রাণ একদল নিভৃতচারী কর্মী পুরুষের অক্লান্ত প্রচেষ্টা ও স্বেচ্ছা প্রণোদিত  দানের ফসলে প্রতিষ্ঠিত হলো, উজ্জ্বল একটি আলোকবর্তিকা এবং সেটা হলো এখনকার মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ।

          প্রকতপক্ষে উপযুক্ত প্রমানিক তথ্যের অভাবে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের তথ্য ভিত্তিক ইতিহাস বর্ণনা সম্ভব হচ্ছে না বিধায় আমরা দুঃখিত। তার কারণ ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের সময় কলেজ অফিসে ও ষ্টোর রুমে রক্ষিত অনেক মূল্যবান দলিল ও বিভিন্ন তথ্য সম্বলিত কাগজপত্র নষ্ট হয়ে যাওয়াতে অনেক মূল্যবান তথ্য হারিয়ে গেছে। যে টুকু তথ্য আমাদের হাতে এসেছে, তার সূত্র গুলো হলোঃ কলেজ প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে জড়িত, এমন কিছু কিছু জীবিত প্রবীন ব্যক্তিদের সাথে আলাপচারিতা, বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত বিভিন্ন ম্যাগাজিন স্মরণিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন লেখকের প্রবন্ধ ইত্যাদি। এগুলো থেকে জানা যায় যে, কলেজ প্রতিষ্ঠায় মূলত নেতৃত্বে ছিলেন সর্বজনাব মরহুম দেওয়ান আলহাজ্ব আব্দুল বাছিত (প্রাক্তন প্রাদেশিক মন্ত্রী), মরহুম হাজী কেরামত আলী, মন্মথ পোদ্দার (মৌলভী টি এস্টেটের মালিক), মরহুম মোঃ ইনাম উল্লাহ, এন কে পাত্র, ব্যোমকেশ ঘোষ, তৎকালীন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী চাম্পালাল সান্ডে, সৈয়দ সরফরাজ আলী, আলী হায়দার খান সহ আরো অনেকে। কলেজটি প্রতিষ্ঠার প্রথম দিকে বিভিন্ন দাতা ব্যক্তি বিভিন্ন প্রকার সহায়তা করে উত্তর পুরুষকে চিরদিনের জন্য কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করেছেন। এদের মধ্যে অনেক ব্যক্তি কলেজের অবকাঠামোগত উন্নয়নে আর্থিক আনুকূল্য প্রদান করেছেন। যাঁদের মধ্যে দেশী ও প্রবাসী দুই-ই আছেন। পঞ্চাশ দশকের পূর্ব থেকেই প্রবাসী অধ্যুষিত এ অঞ্চলের নাম জানা অজানা অনেক দানশীল ব্যক্তি কলেজ প্রতিষ্ঠায় স্ব স্ব অবদান রেখেছেন। এটা নিশ্চয়ই শিক্ষার প্রতি এ অঞ্চলের মানুষের আগ্রহের কথা প্রমাণ করে।

          অর্থায়নের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি অবদান যিনি রেখেছেন, তিনি হচ্ছেন মরহুম হাজী কেরামত আলী বর্তমান শিক্ষক মিলনায়তন সংলগ্ন উত্তরদিকের পুরাতন ভবনটি (ভবন নং-১) তাঁর একক অর্থায়নে নির্মিত। তাছাড়া মরহুম হাজী জরিপ মিয়াসহ অসংখ্য দাতাদের একাংশের নাম ও ঠিকানা আজও কলেজের পুরাতন ভবনের গায়ে লাগানো একটি বিশাল শ্বেত পাথরে খুদাই করা আছে। এই নাম ফলকটি নিবিড় পর্যবেক্ষণে ধরা পরে যে শুধু মৌলভীবাজারেরই নয় মৌলভীবাজারের বাইরের অনেক দানশীল শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি এ মহৎ কর্মে অংশ নিয়েছিলেন।

          এ কলেজটি প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে প্রতিষ্ঠান, দেশ ও সমাজের বিভিন্ন কাজে অংশ নিয়েছে। ষাট দশকের বিভিন্ন আন্দোলনে এই কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণ উল্লেখ করার মত। এই কলেজ যেমন স্থানীয়, জেলা এবং জাতীয় পর্যায়ের নেতৃত্বের জন্ম দিয়েছে; তেমনি রাষ্ট্র পরিচালনায় দক্ষ আমলা, শিক্ষক, এডভোকেট, ডাক্তার এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াসহ নানা পেশার মানুষ সৃষ্টি করেছে। যাদের অনেকেই আজকে ও নিকট অতীতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে এই কলেজের শিক্ষকবৃন্দ ও ছাত্ররা যথাযথ অবদান রেখেছে। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে আত্মদান করেছেন এমন ছাত্রদের মধ্যে আছেন জনাব আব্দুল মুকিত, আব্দুস শহীদ, কৃপেশ রঞ্জন কর, রহিম বখশ (খোকা), সুদর্শন দেব, সমীর কুমার ঘোষ প্রমূখ।

          এই প্রতিষ্ঠানটির অনুরাগী ও বিদ্যোৎসাহী অনেক মহৎ ব্যক্তি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রকার উন্নয়ন সাধন করেছেন। বিশেষ করে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী মরহুম এম. সাইফুর রহমান ও বর্তমান জাতীয় সংসদের  চীফ হুইপ জনাব আব্দুস শহীদ কলেজের বিভিন্ন অবকাঠামোগত ও একাডেমিক উন্নয়নে ব্যাপক সহযোগিতা করেছেন ও আজও তা অব্যাহত রয়েছে। মৌলভীবাজারবাসী তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।